Wednesday, September 11, 2013

শিল্পীর দায়বদ্ধতা এবং ঠেলাঠেলি করে শিল্পী হওয়া

এই সোশ্যাল নেটওয়ার্কে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে আমার একটা কর্ম আছে। সেখানে বাংলাদেশ ও ভারতের অনেক মানুষের আনাগোনা। তো, কলকাতার এক তরুণ রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী নিজের গাওয়া গান নেটে এতোটা ছড়াতে চান যে, এই প্রদর্শনবাদী মানসিকতা দেখে তাঁকে ভীষণ দরিদ্র মনে হয়। নিজের বদনখানা সবখানে জুড়ে দেন। এতে তাঁকে আরও অগ্রহণযোগ্য মনে হয়। ফলে, আমি তাঁর কোন গান শেয়ার দেই না।

আগেও তিনি আমাকে ম্যাসেজ করে তাঁর গাওয়া গানের লিঙ্ক দিয়েছেন। আমি শুধু দেখেছি মাত্র। কোন প্রতিক্রিয়া জানাই নি। এরপর একদিন আবারো তিনি তাঁর গানের একটা লিঙ্ক ম্যাসেজ করেই দৌড় দিলেন।

আমি লিখলাম, এটা কি এবং কিসের, বলবেন কী?
কলকাতার শিল্পী : RABINDRANATH er gaab. তারপর gaab সংশোধন করে লিখলেন *gaan
আমি : পোস্ট করতে বলছেন তো?
কলকাতার শিল্পী : han abong apnader feedback mantyabya about d video (হ্যাঁ, এবং আপনাদের ফীডব্যাক মন্তব্য অ্যাবাউট দি ভিডিও)

এরপর তাঁর বোধোদয়ের জন্যে আমি বললাম : আপনি কবিগুরুর গান গাওয়ার যোগ্য মানুষ নন বলে আমি মনে করি। আপনি গান প্রাণে নিয়ে গেয়ে যাওয়ার থেকে আপনার গান ও চেহারা দেখানোর জন্যে খুব উদগ্রীব। এটা আমি অনেক খেয়াল করেছি। আপনার এই চেতনার কারণে আমি আপনার গানকে এড়িয়ে যাবো। আমি বিশুদ্ধবাদী।

আপনি শুধু লিঙ্ক কেন দিয়েছেন তাও ভদ্রতার সাথে বলেন নি। আপনি প্লিজ গুরুদেবের গান গাওয়া বন্ধ করেন অথবা চেতনা শানিত করুন।

আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

আপনার মঙ্গল হোক!

এরপর তিনি ইনিয়ে বিনিয়ে নিজের অবস্থান বোঝাতে চাইলেন। যা লিখলেন, সে লেখার মধ্যেও শৈল্পিকতা পেলাম না। আমি কে বলছি, তা জানাও জন্যে খোঁচা দিলেন। আমি আমার নিজস্ব প্রোফাইল দিলাম আর বললাম,

আপনার উত্তর বলে দিচ্ছে আপনার মাথা পাকে নি। মাথা পাকান, ধারণ করুন গুরুদেবের চেতনা ও নান্দনিকতা। আশা করি আপনার নিজের মঙ্গল হবে। আর না হলে বন্ধ করুন নিজেকে তুলে ধরার জন্যে গুরুদেব কে ব্যবহার করা।

আর কোনও প্রকার কথা হয় নি। আমার প্রোফাইল লিঙ্ক পেয়ে আমাকে ব্লক করে আবারো নিজ প্রচারে ব্রতী হয়েছেন।

পুনশ্চ : কলকাতার ওঁই শিল্পীর গানের লিঙ্ক এখনো অনেক জায়গায় ছড়ানো দেখি। গুরুদেবের গান গাওয়ার মতো যোগ্য মানুষ না হওয়ার পরেও তিনি টিভিতে মুখ দেখাচ্ছেন, গানের অ্যালবাম বের হচ্ছে, নিশ্চয় আসরে আসরে ডাক পাচ্ছেন। এভাবেই ঘষতে ঘষতে অনেকে শিল্পী সাজছেন। এর ফলাফল হিশেবে, শিল্পের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে অপ্রয়োজনীয় মানুষ।

এই দৃশ্য আমাদের দেশে ভারতের থেকে অনেক অনেক বেশি। সঙ্গীতে শুধু নয়, শিল্পকলার সব ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় মানুষেরা ঢুকে শিল্পকলার মান নষ্ট করছে। এর জন্যে নিজেদের দায়বদ্ধ হওয়ার বিকল্প আর কিছু নেই। কারন, যে ঠেলাঠেলি করে শিল্পী হতে চায় তাঁকে কে নিষেধ করতে যাবে?

-রুমন আনাম

No comments:

Post a Comment