Friday, February 15, 2013

একটি সহজ অংক

এরকম প্রতারণা পদে পদে

আমাদের দেশে মুঠোফোন সেবাদাতাদের মধ্যে সবচেয়ে বড়ো কোম্পানী গ্রামীণফোনের আমি একজন গ্রাহক। আমাদের দেশে এই কোম্পানীটি অন্যান্য মুঠোফোন সেবাদাতা কোম্পনীর থেকে ভালো(?) সেবা দেন বলে সবসময়ই নিজেরা বলে থাকে এবং তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলে। সেদিকে না গিয়ে আমরা শুধু একটা সহজ হিসাব করবো আজ। গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা এখন ২.৮৭ কোটি (সুত্র: ডেইলি স্টার, ২৪ অক্টোবর, ২০১০)।-প্রতিদিন এই পরিমাণ গ্রাহকের অনেকেই নানা প্রয়োজনে গ্রামীণফোনের কলসেন্টারে কল করে কথা বলেন। কখনো গ্রামীণফোনসৃষ্ট সমস্যার সমাধান নিতেও গ্রাহক কল করতে ব্যাধ্য হন।
আমরা ধরে নিলাম যে এই বিরাট সংখ্যক গ্রাহকের মাত্র ১শতাংশ প্রতিদিন তাদেরকে কল করেন। গ্রাহক কল করে সঙ্গে সঙ্গে কখনোই কথা বলতে পারেন না। কারণ, তাদের নাম্বারগুলো ব্যস্ত থাকে। প্রতিটি গ্রাহককে তার সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কল সেন্টারে কথা বলতে নূন্যতম ১মিনিট থেকে ১০মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। আমরা গড় করতে এর মধ্যবর্তী সময় ৫মিনিট ধরে নিতে পারি। কিন্তু, কল করে অপেক্ষার এই সময় গ্রাহককে ঠিকই চার্জ দিতে হয়। আবার এমনও হয় যে গ্রাহকের মুঠোফোনে কম টাকা থাকলে অপেক্ষা করে থেকেই কল কেটে যায়। কিন্তু তিনি কোনো সেবা পান না। হিসেব করলে দেখা যাবে ২.৮৭কোটি গ্রাহকের মধ্যে থেকে ১শতাংশ হারে প্রতিদিন কল করেন ২৮৭০০০জন গ্রাহক। গ্রামীণফোনের কলসেন্টারে কল করতে প্রতি মিনিট খরচ হয় ১টাকা এবং শতকরা ১৫ভাগ মূসক। এই হারে হিসেব করলে দেখা যাবে ২৮৭০০০টি কলের বিপরীতে ৫মিনিট করে অপেক্ষা করে, সেবা না পেয়ে প্রতিদিন গ্রাহকরা মোট ১৪৩৫০০০মিনিট অপেক্ষা করেন। টাকার অংকে ফেললে তা হয় ১৬৫০২৫০.০০টাকা। প্রতিদিন গ্রামীণফোন এই পরিমাণ টাকা সেবা না দিয়েই তাদের ঘরে তুলছে। এই টাকা নেওয়াকে আমরা কোন নিয়মের মধ্যে ফেলতে পারি? এই অস্বচ্ছ উপায়ে টাকা নেওয়াকে কি আমরা প্রতারণা বা অন্যায় বলতে পারি না? উপরের হিসেব অনুসারে গ্রামীণফোন প্রতি বছরে প্রতারণা করে আয় করে ৬০২৩৪১২৫০.০০টাকা। গ্রাহকদের থেকে এমন অন্যায় অর্থ আদায়/উপার্জন দেখার দ্বায়িত্ব কি সরকার ও বিটিআরসির নয়? মুঠোফোন কোম্পানীর এমন মাত্র একটি প্রতারণার উদাহরণ দেওয়া হলো বা একটি কোম্পানীর উদাহরণ দেওয়া হলো। এমন আরো অনেক আছে যা একই সাথে অন্যায় ও অপরাধ।

এটি ১১.১১.২০১০ তারিখের দিকের একটি পুরাতন লেখা।

No comments:

Post a Comment