Wednesday, March 26, 2014

মানুষের কথা

মানুষের প্রয়োজন, রুচি ও চিন্তা একেক বয়সে একেক রকমের হয়ে থাকে। শিশু বয়সের চিন্তা কিশোর বয়সে পরিবর্তিত হয়। কিশোর বয়সের চিন্তা যৌবনে আবারো পরিবর্তিত হয়। শেষ বয়সে এসে মানুষের চিন্তা আরেকবার পরিবর্তিত হয়।

একজন বয়স্ক মানুষ একজন শিশুর মন ও প্রয়োজন তার মতো করে বুঝতে পারে কী? একজন বয়স্ক মানুষ কোনও কিশোর বা কিশোরীর মন ও প্রয়োজন তার মতো করে বুঝতে পারে কী? তেমনি একজন বয়স্ক মানুষ একজন যুবক বা যুবতির মন ও প্রয়োজন তার মতো বুঝতে পারে কী? সম্ভবত পারে না।

আমাদের রাষ্ট্র বা সমাজে শুধুমাত্র বয়স্ক মানুষেরাই বাস করে না। এখানে শিশু, কিশোর, যুবা, বয়স্ক; সব ধরণের মানুষের বাস। তাহলে সমাজে ও রাষ্ট্রে সব বয়সী মানুষের প্রতিনিধিত্ব থাকবে না কেন? সব জায়গায় শুধু বয়স্কদের ক্ষমতা দিয়ে রাখা হলে, বুড়া সমাজপতি কিংবা বুড়া রাষ্ট্র পরিচালনাকারীরা - শিশু, কিশোর বা যুবদেরকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে। তারা যে নিয়ম ও আইন করবে, তাতে শিশু, কিশোর, যুব ও তাদের মধ্যে অধিকারের ফারাক রাখবে। ফলে শিশু, কিশোর বা যুবারা তাদের ইচ্ছা অনিচ্ছার কাছে জিম্মি থাকতে হবে।

প্রতিটি প্রাণের নিজস্বতা আছে। ছোট-বড়ো ইচ্ছা বা অনিচ্ছা আছে। আছে ভালো লাগা বা মন্দ লাগা। সেই নিজস্বতাকে সম্মান করার নামই সাম্য। প্রতিটি ইচ্ছাকে যত্ন করার নামই মানবতা। বয়সে কম বলে সেই ইচ্ছা ও ভালো লাগাকে বুড়োরা গলা টিপে মেরে ফেলবে; এটা হতে পারে না। এটা অসভ্যতা। শুভ সমাজে শুধু বুড়োদের রাজত্ব থাকতে পারে না। সব বয়সী মানুষের অনুভূতি সম্মানের দৃষ্টিতে দেখা কর্তব্য। বুড়োরাই শুধু সম্পদ ও ক্ষমতার খবরদারি করবে সেটাও হতে পারে না। প্রতিটি প্রাণ জন্মসূত্রে সমান অধিকার পাবার দাবীদার। সেই অধিকারকে যারা বয়সের অজুহাতে খর্ব করে তারা সভ্য সমাজের অন্তরায়।

আইন করো, নিয়ম করো, গীত গাও, বাদ্য বাজাও; তাতে কোনও লাভ নেই। মানুষ যদি কষ্ট পায়, সে মানুষ পাগল বা শিশু হলেও সেই সমাজকে ভেঙে গড়তে হবে।

No comments:

Post a Comment