Friday, April 3, 2015

প্রথম আলো : পথচলা হোক হীনমন্যতা ছেড়ে শুদ্ধতার পথে

বর্ণিল বিয়ের পাতা
(দেখতে সমস্যা হলে ছবিতে ক্লিক করে বা ডাউনলোড করে দেখতে পারেন)

এক সময় প্রথম আলো কে শুধু একটি পত্রিকা নয়, বরং, নীতি, আদর্শ, সততা, শুদ্ধতা ও চেতনার অপর নাম মনে করতাম। এই পত্রিকা নিয়ে আমি গর্ব করতাম। সেই ২০০৪সাল থেকে, যখন কিশোর ছিলাম, নানান সামাজিক অসংগতি ও সমস্যা নিয়ে চিঠিপত্র ও উপ-সম্পাদকীয় এর মতামত অংশে এই পত্রিকায় লিখেছিও। এরপর ধীরে ধীরে এই পত্রিকার অনাদর্শিক এবং অশুদ্ধ কাজ দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছি। এখন এই পত্রিকাকে যতোটা সম্ভব এড়িয়ে চলি। এই পত্রিকা আসলে গতানুগতিক সমাজেরই প্রতিচ্ছায়া। আগে একে অনন্য-মানবিক ও অনুকরণীয় ভাবতাম। সামাজিক রুগ্নতা তাড়াতে এটি এক অন্যতম শক্তি হিশেবে কাজ করবে। এই পত্রিকা মূলত আদর্শের কথা বলে আমার বা আমাদের আস্থাকে সম্বল করে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের পথে চলেছে।


আজ আবার ক্ষিপ্ত হলাম এদের বৈশাখের বিশেষ ম্যাগাজিন "বর্ণিল বৈশাখ" দেখে। যেহেতু টুকটাক ফটোগ্রাফি করি, তাই, ছবির দিকে সবার আগে চোখ গেল। কোনও ছবি দেখলে, সেটা কার তোলা, তা জানতে ইচ্ছা করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রথম আলো ফটোগ্রাফারদের নাম প্রকাশের ক্ষেত্রে দ্বৈত নীতি অবলম্বন করেছে এবং আগেও করতো। বর্ণিল বিয়েতে তাদের স্টাফ ফটোগ্রাফাররা যাচ্ছেতাই ছবি তুললেও ছবিতে তাদের নাম থাকলেও অন্য ফটোগ্রাফারদের নাম উল্লেখ করে নি। এক্ষেত্রে তারা ছবিটি বর্ণিল বৈশাখের বলে চালিয়ে দিয়েছে।

কিছুদিন আগে ডিজে সনিকার একটি চমৎকার ছবি প্রকাশের সময়ও দেখেছি তারা ওই ফটোগ্রাফারের নাম উল্লেখ করে নি; লিখেছে ছবিটি প্রথম আলোর। অথচ ওই ছবিটা প্রথম আলোর তোলা নয়, অন্য এক আলোকচিত্র শিল্পীর। যেকোনো শিল্পীকে তার মর্যাদা না দেওয়া বাহাদুরির কাজ নয়। এটা নিশ্চিত হীনমন্যতা, অসভ্যপনা এবং হিংসুটে মনের প্রকাশ।

গত কয়েক মাস আগে বর্ণিল বিয়ে নামের এক ম্যাগাজিনেও দেখেছিলাম এদের হীনমন্যতার জ্বলন্ত উদাহরণ। এদের স্টাফ ফটোগ্রাফারকে এরা শিল্পী হিশেবে তুলে ধরার চেষ্টা করলেও প্রকৃত মানুষগুলিকে অবহেলা করেছে। ওই ম্যাগাজিনে তিন ক্রিকেটারের বিয়ের ছবি তোলার কথা লিখেছেন তিন ফটোগ্রাফার "তাঁদের বিয়ের ছবির গপ্পো" শিরোনামে। সেখানে খ্যাতিমান ফটোগ্রাফার প্রীত রেজা ভাইয়ের পাশাপাশি শামসুল হক এবং সৌরভ দাশ নামক তাদের দুজন ফটোগ্রাফারের ছবি ও লেখা ছাপা হয়েছে। প্রীত রেজার ছবির পাশাপাশি তাদের ছবি দেখলেই বুঝে যাবেন যে তারা কোন পদের ফটোগ্রাফার। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, প্রথম আলোর ওই দুই ফটোগ্রাফারের চেয়ে আমার অনেক ফটোগ্রাফার ছোটভাই অনেকগুণ ভালো ছবি তৈরি করে। আমাদের দেশে ভালো ফটোগ্রাফার অনেক আছে। বিয়ের ছবি তোলার কথা আসলে প্রীত রেজার নাম এসেই যায়। তাই প্রথম আলো প্রীত ভাই কে জায়গা না দিলেই নয় বলে, দিয়েছে। আর বাঁকিদের স্পষ্টভাবে অবহেলা করেছে। এটি পেশাদারী বা সভ্য কাজ হতে পারে না।

অনেকেই এসব নানান অন্যায়ের জন্যে সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান দায়ী নন বলে মনে করেন। তাদের মতামত, পত্রিকার প্রতিটি বিভাগের অন্যায়ের জন্যে তিনি দায়ী হবেন না। আসলেই কি তাই? কোনও প্রতিষ্ঠানের প্রধান ব্যক্তি সৎ ও নীতিবান হলে কর্মচারীদের অসৎ কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে কি?

আশা করি প্রথম আলোর বোধোদয় হবে এবং হীনমন্যতা ছেড়ে শুদ্ধতার পথ অনুসরণ করবে।

No comments:

Post a Comment