Thursday, January 15, 2015

মানুষের কথা

মানুষ এমনি এমনি অহংকার করে না। অহংকার করার মতো কিছু থাকলে তখনই করে। আমি অহংকারের বিরুদ্ধে না। অহংকার ততোটুকুই সমর্থনযোগ্য যা ব্যক্তির মানবিক গুণাবলীকে মলিন করবে না। সম্পদ ব্যক্তিকে তার অজান্তেই অহংকারী করে তোলে।

মানুষ দুই রকম সম্পদ নিয়ে অহংকার করে। এক হল তার অর্জন করা সম্পদ এবং দ্বিতীয়টা অর্জন না করে পাওয়া সম্পদ। যারা অর্জন করা সম্পদের অহংকার করে তাঁরাই উত্তম। এই অহংকার সৃষ্টিশীল। এরকম অহংকার ব্যক্তিকে আরও শক্তি দেয় এবং ব্যক্তি অর্জন করার জন্যে আরও বদ্ধপরিকর হয়ে ওঠে। যারা অর্জন না করা সম্পদের অহংকার করে তারা নিতান্তই অধম। এই অহংকার সৃষ্টিশীল নয়। এই অহংকার ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট জায়গায় আবদ্ধ করে রাখে।


পারিবারিকভাবে পাওয়া সম্পদ, পিতামাতার সূত্রে পাওয়া সামাজিক অবস্থান অথবা জন্মগতভাবে পাওয়া শারীরিক সৌন্দর্য, গঠন বা লিঙ্গগত কারণে অহংকার করা মানবিক নয়। জ্ঞান, আদর্শ, চেতনা, কর্ম, বিনয়, ভালোবাসা কিংবা সমূহ মানবিক গুণাবলীর সম্পদে নিজেকে সম্পদশালী করলে সেটাই আপনার প্রকৃত সম্পদ। এই সম্পদের কারণে অহংকার করলে সেটা সহনীয়। তবে অহংকার মানবিক গুণাবলীকে নষ্ট করলে সেই অহংকার কোনভাবেই মর্যাদার হবে না। কারণ, আমরা মানুষ!

এই পৃথিবীতে যতো ধন-সম্পদ আছে তা কারো একার নয় অথবা কিছু মানুষের নয়। তাতে সব মানুষের সমান অধিকার। তাই ধন-সম্পদের অহংকার করা অমানবিক। সেটা অর্জন করা ধন-সম্পদ হলেও।

পৈতৃকসূত্রে পাওয়া ধন-রত্নের অহংকার করা অট্টালিকাবাসীর চেয়ে চেতনা ও আদর্শের অহংকার করা কুঁড়েঘরে বাসী একজন রিকশা চালক আমার কাছে সম্মানের।

সবার ভালো হোক!

No comments:

Post a Comment